হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান
জলঢাকা নীলফামারী প্রতিনিধব
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২য় ধাপে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২১মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে প্রার্থীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের উপজেলা নেতা। তাপদাহের মধ্যেই প্রার্থীরা ছুটছেন এক এলাকা থেকে অন্য এলাকা। ভোট চাইছেন ভোটারের কাছে নিজের জন্য।
এবারে দলীয় প্রতীক না থাকায় এবং বিএনপি, জামায়াত সহ অন্য দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেরাই নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছ। ৩০ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের পর ২১ মের ভোট যুদ্ধে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পছন্দের প্রতিক নিয়ে তিন পদে ৪জন করে ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পুরোদমে নির্বাচনি প্রচার প্রচারনা শুরু করেছেন।
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। হাট-বাজার, চায়ের দোকানে চলছে ভোটের আলোচনা সমালোচনা । পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার অলিগলি।
নির্বাচনের আর ১৪ দিন বাকি থাকলেও ভোট নিয়ে ভোটারদের মাঝে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তীব্র দাবদাহে জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত। এ ছাড়া বোরো ধান কাটা আর সংগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। ফলে গণসংযোগ, মটর সাইকেল শোডাউন, পথসভা ও মিছিলের মাধ্যমে প্রার্থীরা সরব।
এ পরিস্থিতিতে চলছে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ০৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও
নির্বাচন পরিণত হয়েছে বিভক্ত আ, লীগের ভোটের লড়াইয়ে। এ রকম পরিস্থিতিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জলঢাকা আওয়ামী নেতৃত্ব ও রাজনীতি দ্বন্দ্বে পুরনো পথে হাঁটছে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বর্তমানে নির্বাচনী লড়াইয়ে কোন দলীয় প্রতিক না থাকায় সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৩ টি পদে
৪ জন করে মোট ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন তারা হলেন চেয়ারম্যান পদে চিংড়ি মাছ প্রতিকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর, ঘোড়া প্রতিকে
উপজেলা আ,লীগের সাবেক সভাপতি আনছার আলী মিন্টু, আনারস প্রতিকে
বর্তমান উপজেলা আ,লীগ সাধারন সম্পাদক আবু সাঈদ শামীম, মটর সাইকেল প্রতিকে বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম আজম এলিচ।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী তারা হলেন টিউবওয়েল প্রতিকে উপজেলা শ্রমিক লীগ সাধারন সম্পাদক শাহিনুর রহমান, তালা প্রতিকে ব্যাবসায়ী নুর আলম,চশমা প্রতিকে যুবলীগ নেতা মনোয়ার হোসরন লিটন,জাপা নেতা তোফায়েলুর রহমান পায়েল।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী তারা হলেন ফুটবল প্রতিকে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম, হাস প্রতিকে আ,লীগ নেত্রী মাসুমা বেগম, রাহেলা বেগম, জাপা নেত্রী আনিতা রানী
প্রার্থীদের ঘিরে তিন ভাগে বিভক্ত উপজেলার তৃণমুল আওয়ামী লীগ। প্রভাব পড়েছে নেতাকর্মীর মাঝে।
স্থানীয়রা বলছেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি থাকলেও
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনছার আলী মিন্টু
ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরে মধ্যে লড়াই হবে।
এদিকে নির্বাচনে আমেজ না থাকার বিষয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা হলে উপজেলার শৌলমারী বানপাড়া
গ্রামের আবুল হেসেন নামের একজন ভোটার বলেন, সাধারণ মানুষ মাঠে-ঘাটে কাজ নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়াও বিএনপিসহ কয়েকটি দল অংশ নেয়নি।
কৈমারীর গাবরোল গ্রামের বাবলু নামে একজন বলেন, এখন বোরো ধান কটার মৌসুম চলছে। মানুষজন ব্যস্ত ধান নিয়ে। তাছাড়া কয়েক দিন ধরে তীব্র গরমের কারণেও সাধারণ মানুষ ভোট নিয়ে তেমন মাতছেন না।
এদিকে জলঢাকা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কে সামনে রেখে গ্রামের পাড়া-মহল্লায় বইতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। আর এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে হাটবাজারের চায়ের দোকান গুলোতে।
প্রার্থীরা তাদের কর্মী সমর্থকদের সা৬ নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন ও পথসভায় তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।। এ নিয়ে জলঢাকায় জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
পৌর আ.লীগের একটি ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল গফুরের বলেন, “যে নেতা আমাদের সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকে তাকেই নির্বাচিত করা দরকার”।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার
১শত ৫টি ভোট কেন্দ্রে ২লাখ ৬০ হাজার ২শত ৩৬ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১লাখ ৪৩হাজার ৩৯জন,মহিলা ভোটার ১লাখ ৩৭ হাজার ১শত ৭৯ জন ও ১জন হিজরা।
আপনার মতামত লিখুন :